নিজস্ব প্রতিবেদক : বিশ্বের ৮০টি দেশকে হারিয়ে ইরানে কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম হওয়া বাংলাদেশের বিশ্বজয়ী হাফেজ বশির আহমাদকে ফুলের শুভেচ্ছা ও সংবর্ধনা দিয়েছে ছাত্রলীগ।
সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মধুর ক্যান্টিন প্রাঙ্গণে তাকে এ সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।
এ সময় ছাত্রলীগের মাদ্রাসা শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক জহিরুল ইসলামের ব্যবস্থাপনায় বশির আহমাদ ও তার ওস্তাদ নেছার আহমাদ আন নাছিরীর হাতে ফুলের তোড়া ও গিফট বক্স তুলে দেন ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান।
এ প্রসঙ্গে সাদ্দাম হোসেন বলেন, বাংলাদেশের বেস্ট ফ্রেন্ড, বাংলাদেশের ছাত্ররাজনীতির ট্রেন্ড সেটার, বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের আপসহীন কণ্ঠস্বর, একটি ইনক্লুসিভ ছাত্ররাজনীতি প্রতিষ্ঠার জন্য প্রত্যেকটি শিক্ষার্থীর জীবনমান উন্নত করার জন্য, প্রত্যেকটি শিক্ষার্থীর অধিকার বাস্তবায়নের জন্য দায়বদ্ধ সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে বশির আহমাদকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। তিনি বলেন, আমরা ছাত্রসমাজকে সব সময় একটি ইনক্লুসিভ ছাত্র রাজনীতির দিকে নিয়ে আসতে চেয়েছি। আমাদের মেইনস্ট্রিম পলিটিক্যাল এক্টিভিজমের সঙ্গে মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থা এবং মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে সাংস্কৃতিক ব্যবধানটা ছিল, সেই পার্থক্যটি ঠিক দেওয়ার জন্যই কিন্তু আমরা এ উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। শুধু তাই নয়, আমরা বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতিতে প্রথম মাদ্রাসাবিষয়ক সম্পাদক পদটি সংযোজন করেছি। আমরা মনে করি, মাদ্রাসার যে মেধাবী ও লড়াকু শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া করে এবং যারা বাংলাদেশকে নানাভাবে কন্ট্রিবিউট করে, যারা আমাদের নীতি-নৈতিকতা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে আধ্যাত্মিকভাবে আমাদের বাংলাদেশের আত্মাকে শক্তিশালী করার জন্য কাজ করে সেই জায়গায় এবং আমাদের সরকার, বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থা শক্তিশালী করতে পারি, সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।
সাদ্দাম হোসেন বলেন, আজকের এই শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের বলতে চাই, আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে জাতির পিতার সোনার বাংলা গঠনে কাজ করব, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে আমরা কাজ করব এবং মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা যেখানে অধিকার বঞ্চিত হবে, যেখানে নিজেদের প্রাপ্য অধিকারের জন্য লড়াই করবে, সেখানেই বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কথা বলবে। মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা যেন মানসম্মত বাজেট পায়, বরাদ্দ পায় এবং আমাদের মেইন স্ট্রিম এডুকেশনের সঙ্গে, মূলধারার অর্থনীতির সঙ্গে আমাদের মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা যেন অন্তর্ভুক্ত হতে পারে সেই লক্ষ্যে আমরা আগামীতেও কাজ করার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে গিয়ে চলব।
শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, ইরানে কোরআন প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের কৃতি সন্তান বশির আহমাদকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। বশির আহমাদের জন্য অনেক বেশি শুভকামনা। কারণ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ইসলামের প্রকৃত মর্মার্থে বিশ্বাস করে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ প্রতিটি ধর্মের যে সত্য ও চিরন্তনতা সেই শব্দটিতে বিশ্বাস করে। যে কেউ যেখানেই পড়াশোনা করুক বা যেভাবেই জ্ঞান অর্জন করুকনা কেন, যদি সে বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারে বশিরের মতো আরও উচ্চ আসনে আসীন করতে পারেন, তাহলে আমরা তাকে শুভেচ্ছা জানাই, সাধুবাদ জানাই। আমরা চাই বশির আহমাদ শুধু নয়, এরকম আরও অনেক বশির বিশ্ব দরবারে ইসলামিক ক্ষেত্রে, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক, চিকিৎসা, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং সব ক্ষেত্রেই বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করবে, বাংলাদেশের জন্য আরও গৌরবান্বিত মুকুট ছিনিয়ে আনবে।
এর আগে, সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতার আয়োজন করে ইরান। যেখানে প্রথম হন বাংলাদেশের হাফেজ বশির আহমাদ।বশির ঢাকার মারকাজুত তাহফিজ ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসার ছাত্র। তার বাড়ি হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার বেগুনাই গ্রামে। তারা বাবা সহকারী অধ্যাপক মাওলানা মো. আবদুর রশিদ।