নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজধানীর দক্ষিণখানে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আশকোনার 'মা হাদুস সুন্না' নামের একটি মাদ্রাসার হেদায়েতুন্নাহু'র তিন ছাত্র মারা গেছেন।
শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টার দিকে দক্ষিণখান থানার আশিয়ান সিটির পয়সা বাজার এলাকায় দুর্ঘটনাটি ঘটে। পরবর্তীতে তাদেরকে হাসপাতালে পাঠানো হলে কর্তব্যরত চিকিৎস
মৃত ঘোষণা করেন। নিহতরা হলেন- রবিউল হাসান (১৬), জোনায়েদ আহমেদ (১৬) ও ওমর ফারুক (১৭) তিন জনই মাদ্রাসা ছাত্র।
নিহত রবিউল হাসান বরিশালের বাউফল উপজেলার বরিপাশা গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে। বর্তমানে উত্তরখানের বালুরমাঠ এলাকায় ছোট বোন ও বাবা-মায়ের সাথে থাকতেন। নিহত জোনায়েদ আহমেদ লক্ষ্মীপুর রামগঞ্জ উপজেলার বক্তারপুরের শফিকুল ইসলামের ছেলে। নিহত ওমর ফারুক নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার রূপসী পৌর এলাকার মো. রাজনের ছেলে।
থানা পুলিশ ও নিহতদের স্বজন সূত্রে জানা গেছে, ওই তিন ছাত্র বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চালাচ্ছিল। হটাৎ করে একটি একটি সিএনজি সামনে পড়ায় ওরা নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে পরে যায়। এতে গুরুতর আহত অবস্থায় রবিউল হাসান ও জোনায়েদ আহমেদকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। অপরদিকে ওমর ফারুককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এদিকে হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা প্রথমে রবিউলকে এবং পরে জোনায়েদ ও ওমর ফারুককে মৃত ঘোষণা করেন।
সন্তানের মৃত্যুর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন নিহত রবিউলের মা কাজল রেখা, ছোট বোন রুমানা আক্তার রাবেয়া'সহ স্বজনরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। সেখান থেকে তাদেরকে দক্ষিণখান থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। সেখানেও কান্নায় ভারী হয়ে উঠে থানা এলাকা।
রবিউলের ছোট বোন রুমানা আক্তার রাবেয়া বলেন, 'আমার ভাই এবার দাখিল পরিক্ষা দিয়েছে। আজ কিভাবে কি হয়ে গেল কিছুই বলতে পারছি না।'
তার মা কাজল রেখা বলেন, 'ওই হোন্ডা ওয়ালা আমার পোলাডারে মাইরা লাইছে। ওই পোলার লগে চইলা আমার পোলাডার দুর্ঘটনা হইছে। আজ আমি সন্তানের মুখও দেখতে পারি।' তিনি বলেন, 'পোলাপান আমার কাছে যে ছাবান পাইছে, আমি কিছুই দেই নাই। বলছি, পরিক্ষা দাও, সব কিছুই দিব। কিন্ত কিছুই দিতে পারলাম না।'
নিহতদের স্বজন মাহাদী হাসান বলেন, 'ওরা সবাই মা হাদুস সুন্না মাদ্রাসার হেদায়েতুন্নাহু বিভাগের ছাত্র। ওমর ফারুক তার বাবার হাঙ্ক মোটর সাইকেল (ঢাকা মেট্রো ল- ৪৩-৮৭৬৬) নিয়ে বের হয়। সাথে বরিউল ও জোনায়েদ যায়। পরে খবর আসে সড়ক দুর্ঘটনায় তিন জন-ই মারা গেছে।'
এ বিষয়ে দক্ষিণখান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) গাজী সালাহউদ্দিন বলেন, 'ওই ছাত্রদের মাদ্রাসায় ওয়াজ মাহফিল হচ্ছিল। ওমর ফারুকের বাবা মাদ্রাসায় আসার পর তার ছেলে মোটর সাইকেলের চাবি নিয়ে চলে যায়। সাথে আরো দুই ছাত্র যায়। পরে দুর্ঘটনায় তিনজনই মারা যায়।'
তিনি বলেন, 'এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। নিহতদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠাবো হবে।'