নিজস্ব প্রতিবেদক
চটকদার আর চাকচিক্য সব লোভনীয় বিজ্ঞাপনের আড়ালে গড়ে উঠেছে প্রতারনার এক জাল। নাজরান বিডি প্রাঃ লিঃ হাউজিং ব্যবসার আড়ালে মূলত গড়ে তুলেছে মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) কোম্পানী। লোভনীয় অফার। লগ্নি করা টাকা কয়েক মাসের মধ্যেই দ্বিগুণ হবে। টাকা মিলবে সপ্তাহে, মাসে কিংবা প্রতি বছরে। এমন সব মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে সর্ব শান্ত করছে গ্রামের সহজ সরল ও অবসর প্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাদের। হাতিয়ে নিচ্ছে টাকা।
তাদের এই প্রতারণা মাধ্যম হিসেবে জানাগেছে,
প্রতারনা চক্রের সদস্য ফ্রি ৫ হাজার টাকা। কোন সদস্য বিনিয়োগকারী আনতে পারলে তার থেকেও মিলবে লোভনীয় কমিশন। এভাবে লোভের ফাঁদ ফেলে শতশত কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে একটি চক্র।
কাওসার নামের এক সদস্য বলেন, তাদের এখানে সদস্য হতে ৫ হাজার টাকা দিতে হয়। আমাকে বলা হয়েছিল চাকরি দিবেন কিন্তু এখন দেখি এটা চাকরি নয় ডেসটিনির মত এমএলএম কোম্পানি।
অপর এক ভুক্তভোগী বলেন, আমি রংপুর থেকে এসেছি তাদের সাথে ব্যবসা করতে। আমি অবসর প্রাপ্ত সরকারি চাকরিজীবী। আমাকে জায়গা দিবেন, আবার বলে ব্যবসায়িক পার্টনার বানাবেন বলে ২লাখ টাকা নিয়ে এখন কোন খবর নেই এরা বাটপার।
অনুসন্ধ্যানে জানাযায়, চক্রটি দিন দিন আরো সক্রিয় হয়ে উঠছে। হাউজিং ব্যবসার অন্তরালে তারা তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে। এমনই একটি চক্র হলো নাজরান বিডি প্রাইভেট লিমিটেড।
প্লট বিক্রি, ব্যবসায়িক অংশীদার হিসেবে নেয়া ও ইনভেস্ট করলে দ্বিগুণ মুনাফা দেয়ার নামে নাজরান বিডি প্রাঃ লিঃ গ্রাহকের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে কয়েকশত কোটি টাকা।
প্রতিষ্ঠানটি কয়েক বছর আগে উত্তরায় ব্যবসা পরিচালনার মাধ্যমে প্রতারণা করে হাতিয়ে নেয় কোটি কোটি টাকা। বর্তমানে কুড়িল চৌরাস্তায় নাজরানের অফিস কার্যক্রম চলমান রয়েছে। সেখানেও থেমে নেই তাদের প্রতারণা। এলাকার সহজ সরল মানুষ গুলো তাদের কষ্টে অর্জিত জমানো টাকা নাজরানে বিনিয়োগ করে স্বর্ব শান্ত হচ্ছেন বলে জানান।
অনুসন্ধ্যানে এমন আরও কয়েকটি এমএলএম কোম্পানির নাম উঠে এসেছে। মেগা সিটির ডি এম ডি পিংকি আখতার, মেগাসিটির এমডি রেজাউল করিম মুখরোচক গল্প বলে মানুষকে ফাঁসিয়ে শত শত কোটি টাকা হাতে নিয়েছে পিংকি রেজাউল সিন্ডিকেট। সমাজে প্রভাবশালী কোন ব্যক্তির সাথে পরিচয় হলে অথবা তার কোন অফিসে বসলে অথবা তার কাছ থেকে কোন জমি ফ্ল্যাট দোকান কিনলে জাল জালিয়াতি কাগজ বানিয়ে তাকে তাদের মালিক সাজানোর চেষ্টা করে থাকেন।
ইউনি পে টু, জি জি এন , ফরেক্স মালয়েশিয়ার কোম্পানি, বিটকয়েন ব্যবসায়ী, এমনকি ব্রাইট ফিউচার কোম্পানির হোল্ডিং লিমিটেডের দুজনই ডাইরেক্টর। সর্বশেষ এরা মেগাসিটি পূর্বাচল নামক একটি কোম্পানি করে মানুষের কাছ থেকে ৭০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তার এক ব্যবসায়ী পার্টনার আমাদের জানিয়েছেন।
এই চক্রে রয়েছে, মাহবুব,নাজমুল ও সাদেক দুই ভাই সহ দাউদপুরের এম এল এম ব্যবসায়ীদের সরকারি খাস জমি দেওয়ার হোতা। ভাড়া সাইন বোট নির্মাণ, অন্য মানুষের কৃষি জমিতে চার হাজার টাকা ভাড়া মূল্যে সাইনবোর্ড লাগিয়ে নিজেদের সম্পদ বলে অফিসে এনে গ্রাহকদের বলা হতো ব্যবসায়ীর জন্য জমি কিনেছেন। এমন সব প্রলোভনে ফেলে গ্রামের সহজসরল মানুষদের বোকা বানিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা।
জানা গেছে, স্থানীয় কিছু মানুষের মাধ্যমে এমএলএম ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করেন মাহবুব। ভূমিঅফিসের একটি সূত্র বলছে, পূর্বাচল দাউদপুর ইউনিয়নে ভূমি অফিস থেকে শুরু করে জাল-জালিয়াতি দলিল তৈরি করার মাস্টারমাইন্ড মাহবুব এক ভয়ঙ্কর আতঙ্কের নাম। তার বিরুদ্ধে রয়েছে বিভিন্ন অপকর্মের মামলা।
এবিষয়ে জানতে মাহাবুবকে ফোন করা হলে তার নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়নি।