নিজস্ব প্রতিবেদক
ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে যাবে সরকার পালিয়ে যাবে আমার প্রতিষ্ঠান থাকবে। এভাবেই ক্রেতাদের আকৃষ্ঠ করতেন নাজরান বিডি প্রা: লি: এর আড়ালে থাকা এমএলএম ব্যবসার ফাইন্যান্স ডাইরেক্টর আক্কাসুর রহমান আকাশ।
চাকচিক্য বিজ্ঞাপনের অফারের আড়ালে ফ্ল্যাট, প্লট বিক্রি, ব্যবসায়িক অংশীদার হিসেবে নেয়া ও ইনভেস্ট করলে দ্বিগুণ মুনাফা দেয়ার নামে গ্রাহকের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। শুধু তাই নয় চাকরির নামে গ্রামের সহজ সরল বেকার যুবকদের টার্গেট করে তাদের প্রতারণা ফাঁদে ফেলে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে এই চক্রটি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এই আক্কাস সিন্ডিকেটে রয়েছে ক্ষমতাসীন দলের কিছু নেতা ও বিভিন্ন বাহিনী থেকে অবসরে যাওয়া কর্মকর্তাদের সামনে রেখে এমন প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছে নাজরান বিডি লি: নামের নামসর্বস্ব ভুয়া কোম্পানি। এর বিনিময়ে মোটা অংকের একটা সম্মানী পেয়ে থাকেন নাজরান বিডি প্রা: লি: নামের অনৈতিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে।
সূত্র থেকে জানা যায়, এরা অনেকেই ব্রাইট ফিউচারের হোল্ডিংস লিমিটেড কোম্পানির শেয়ার অথবা সাধারণ সদস্য ও ছিলেন। আক্কাস নাজরানের খুব প্রভাবশালী ডাইরেক্টর। মূলত তার পিছনে রয়েছে ক্ষমতাসীন দল ও সরকারি কিছু সাবেক কর্মকর্তা। তাছাড়াও রয়েছে, সাবেক কর্মকর্তা জাকির ফয়সাল।
প্রতিবেদক নাম পরিচয় গোপন রেখে তাদের অফিসে গিয়ে জানাযায়, দামের চেয়ে মানে সেরা বলে সদস্যদের হাতে ধরিয়ে দিচ্ছে পণ্য নামক প্রতারণার ফাঁদ। আর এই ধরণের কোম্পানীর সাথে জড়িত হচ্ছেন বেশিরভাগ ডেসটিনি, যুবক ও গ্রাহকের হাজার হাজার কোটি টাকা নিয়ে সদ্য লাপাত্তা ব্রাইট ফিউচার থেকে ট্রেনিং প্রাপ্তরা। সম্প্রতি, ব্রাইট ফিউচার পালিয়ে যাওয়ার পর দেশজুড়ে নাজরান বিডি প্রা: লি: কোম্পানী রাজধানীর উত্তরার আলাউল এভিনিউ সেক্টর-৬ বাড়ী-৩০ ৮ম তলায় অফিসের পাশে বড় একটি অফিস নিয়েছে কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায়। কোম্পানির প্রতিনিধিদের দিয়ে, জমি বা প্লট, ফ্ল্যাট দেয়ার নামে প্রকৃত দামের তুলনায় প্রায় দশ গুনের চেয়েও বেশি বেশি টাকা নিচ্ছেন তারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান,
জমি ক্রয় বিক্রয়ের সময় জমির মালিকদের সাথে চেক জাতিয়াতি করে দীর্ঘ দিন ঘুড়ান এবং এক সময় জমির মালিককে বাধ্য করেন জমির প্রকৃত মূল্য থেকে স্বল্পমূল্যে বিক্রি করতে।
শুধু তাই নয় এই চক্রটি ঢাকা শহরের বিভিন্ন ব্যক্তিকে দীর্ঘ পাঁচ বছর যাবত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে ক্ষমতার অপব্যবহার করে হয়রানি মূলক মামলা দায়ের করে আসছে। এই কাজে আক্কাস ও প্রতিষ্ঠানের এমডি জীবনকে সহযোগিতা করে আসছেন সাবেক সরকারী কর্মকর্তা মীর আমিনুল ইসলাম।
মামলা সূত্রে জানাযায়, এই মীর আমিনুল ইসলাম একসময় এই ধরনের একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক ছিলেন যা আদালতে বিচার চলমান। মীর আমিনুল স্বীকার করেছেন উক্ত প্রতিষ্ঠানে দায়িত্বে ছিলেন। টাকারর বিনিময়ে আক্কাসের বিভিন্ন ক্লাইন্টের সাক্ষী হন। এবং আক্কাস সহ তার সহযোগীরা নকল জ্বালজালিয়াতি কাগজ কোর্টে সাবমিট করেন। প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে ও আইন বিভাগে টাকার বিনিময় মীর আমিনুল ইসলাম কে কখনো কোন মামলার বাদি যা তার হওয়ার কথা না অথবা সাক্ষী হিসেবে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের দপ্তরে মামলা করান। মীর আমিনুল ইসলামের চক্রের কাছে বহু লোক মামলায় জর্জরিত হয়ে সম্পদ খুইয়েছেন। এমন কয়েকটি ঘটনার তথ্য আদালতের নির্দেশে সিআইডি ফরেন্সিক ল্যাবে জালজালিয়াতি প্রমাণ পাওয়া গেছে।
মেহেরপুর জেলার এক বেকার যুবক রফিকুল জানান, আমি পত্রিকায় চাকরির বিজ্ঞাপন দেখে এসেছি। তাদের এক লক্ষ টাকা দিয়েছি। কয়েকদিন পর দেখলাম চাকরির নামে তারা প্রতারণা করেন। টাকা ফেরত চাইলে নানা ভাবে হুমকি দেয়।
অন্য এক সদস্য সুজন বলেন, আমি পাঁচ লক্ষ টাকা দিয়েছি তারা বলেছে এক বছর পর দশ লক্ষ টাকা দিবে। এই কোম্পানীর একজন কর্মকর্তা কিছু দিন পরে জানান এই টাকা ফেরত পাবেনা। তোমার মত গ্রাহক আনতে পারলে টাকা ফেরত পাবে। আমি আসলে প্রতারকের খপ্পরে পরেছি। আমাদের টাকা নাই কিছু বলতে চাইলে আমাদেরকে মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করে।
নাজরান বিডি প্রা: লি: নামের কোন আবাসনের তালিকা আছে কি না জানতে চাইলে রাজধানী উন্নায়ন কর্তৃপক্ষের একটি সূত্র জানায়, নাজরান বিডি প্রা: লি: নামের কোন আবাসনের তালিকা নেই। এমন কি তারা এই নাম প্রথম শুনেছেন বলে জানান।
এ বিষয় সম্পর্কে জানতে নাজরান বিডি প্রা: লি: এর ফাইন্যান্স ডাইরেক্টর আক্কাসুর রহমান আকাশে ফোনে কল করা হল তা বন্ধ পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নাজরান বিডি প্রা: লি:
এর ভাইস চেয়ারম্যান আতাউর রহমান জানান, আমরা কাউকে চাকরি দিচ্ছি না। আমাদের জমি আছে তা মার্কেটিং করার জন্য লোক নিয়োগ করছি। কি হিসেবে নিয়োগ দিচ্ছেন জানতে চাইলে কোন উত্তর দেন না তিনি।
নাজরান বিডি প্রা: লি: এর এমডি এমডি জীবনের ফোনে ফোন দিলে তিনি ফোন ধরেন নি।